নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মারি : জলি

ফাল্গুনী রহমান জলি

ঢালিউডে ফাল্গুনী রহমান জলির আগমন বেশ চমক দিয়েই। বিগ বাজেটের ‘অঙ্গার’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক। এরপর ‘নিয়তি’ এবং ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ নামে দুটি ছবি মুক্তি পায় তার। ছবিগুলোতে জলির অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে।

পাশাপাশি প্রতিটি ছবির গানই দর্শক-শ্রোতারা পছন্দ করেছেন। কাল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বেলাল সানীর ‘ডেঞ্জার জোন’। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন ফাল্গুনী রহমান জলি। দীর্ঘ সাত বছর পর ছবিটি নিয়ে পর্দায় ফিরছেন তিনি।

জলির সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।

অনেক দিন পরে আপনার ছবি মুক্তি পাচ্ছে। কেমন লাগছে?

অনেক আনন্দ লাগছে। ছবিটি আমাদের টিমের ‘ড্রিম প্রজেক্ট’ ছিল।

এ রকম হরর-থ্রিলার গল্পে আগে কখনো কাজ করিনি। তবে একটা কষ্ট রয়ে গেল। যখন ছবিটি নিয়ে সবার মনে উচ্ছ্বাস ছিল, তখন মুক্তি পেল না। তবে এখনো আশা ছাড়িনি আমরা। বিশ্বাস আছে, দর্শক একবার দেখলে নিজেরাই প্রচার করবে, তাদের মুখে শুনে অন্যরাও ছবিটি দেখতে আসবে।

টিজার-ট্রেলার প্রকাশ পেয়েছে এর মধ্যে। সাড়া পেলেন কেমন?

ট্রেলার দেখে ছবিটি পাঁচ বছর আগের, এমন কেউ বলছে না। সবার কাছে মনে হয়েছে নতুন ছবি। আসলে পরিচালক বেলাল সানী ভাই ভিএফএক্স খুব যত্ন নিয়ে করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশের ছবি তা ট্রেলার দেখে বোঝা যায় না। এসব মন্তব্য মনে সাহস এনে দিয়েছে। মনে হচ্ছে, ভালো কিছু হতে চলেছে।

একই দিনে আরো দুটি ছবি—‘৮৪০ ও হুরমতি মুক্তি পাওয়ার কথা। এক সপ্তাহে তিন ছবি মুক্তি কি সাংঘর্ষিক মনে হচ্ছে না?

অবশ্যই। আমাদের কয়টা হল চালু আছে বলেন? তিনটি ছবি মুক্তি পেলে তো হল ভাগ হয়ে যাবে। দর্শকও ভাগ হয়ে যাবে। যত দূর জানি, আমাদের ছবিটিই প্রথম মুক্তির অনুমতি নিয়েছিল। সব শেষে যুক্ত হয়েছে ‘৮৪০’। এখন কী আর করার! নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মারি।

জাজ মাল্টিমিডিয়ার হাত ধরে নায়িকা হয়ে এসেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকে মাহিয়া মাহি, নুসরাত ফারিয়া, পূজা চেরীরা শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। আপনি পিছিয়ে পড়লেন কেন?

আমি সব সময় আমার মতো করে পথ চলতে চেয়েছি। জীবন একটাই, তার ওপর মেয়ে হয়ে জন্মেছি। মাতৃত্বের স্বাদ নিতে ইচ্ছা হলো বলেই বিয়ে করেছিলাম। এখন আমার সেহেমাত রহমান নামের ফুটফুটে একটি কন্যাসন্তান আছে। স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। সুন্দর একটা সংসারও আছে আমার। নারী হিসেবে এটাই তো সবচেয়ে বড় সার্থকতা। অন্যরা এই সার্থকতা কতটুকু পেয়েছেন সেটা তারা বলতে পারবেন। তবে পর্দায় পিছিয়ে পড়লেও বাস্তব জীবনে আমি এগিয়ে আছি বলে মনে করি।

অনেক তারকাই সন্তান নিয়ে ভ্লগ করেন। সন্তান-পরিবারকে সামাজিক মাধ্যমে পরিচয় করিয়ে দেন। আপনি তো সেদিকেও নন…

ঠিক বলেছেন। আমি কখনোই আমার স্বামী-সন্তানকে সামনে আনতে পছন্দ করি না। ব্যক্তিগত মোবাইলে আমাদের অনেক সুন্দর মুহূর্ত ধারণ করা আছে। সেগুলো চাইলে একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে প্রকাশ করতে পারি। কিন্তু কেন করব? আমার ঘর, আমার ঘরের মানুষকে অন্যদের সামনে এক্সপোজ করে টাকা আয় করার ইচ্ছা আমার নেই।

নতুন কোনো ছবি হাতে নেননি?

‘গোঁয়ার’ নামে একটি ছবি করছি। পরিচালক রকিবুল আলম। এর বাইরে আরেকটি ছবি চূড়ান্ত হয়ে আছে। ‘নিয়তি’ ছবির টিম নিয়েই ফিরছি আমরা। শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব।

এখন তো ছবি নির্মাণ হচ্ছে না বললেই চলে। অনেক তারকা শোরুম উদ্বোধন বা ছোট ছোট ইভেন্ট করছেন। আপনাকে এই ধরনের কাজে দেখা যায় না কেন?

সবার একটা ব্যক্তিগত ভালো লাগা আছে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দও আছে। আমার কাছে এই ধরনের প্রস্তাব প্রচুর আসে। তবে আমি রাজি হই না। আমার ভালো লাগে না। ফিতা কেটে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া বা কোনো কম্পানির বার্ষিক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে পারফরম করাটা আমার কাছে সাবলীল মনে হয় না। যারা এই ধরনের প্রস্তাব নিয়ে আসেন সম্মানের সঙ্গেই তাদের না করে দিই। বরং ওই সময়টুকু পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারাটাই আমার কাছে আনন্দের।

ওটিটি প্ল্যাটফরমেও তো কাজ করছেন না?

আমার শুরুটা বড় পর্দা দিয়ে, শেষটাও হবে বড় পর্দায়। আগে একটা সময় ছোট পর্দার তারকারা বড় পর্দায় কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকতেন। আর এখন হয়েছে উল্টো। বড় পর্দার তারকারা হাতে ছবি না থাকায় ঝুঁকছেন ওটিটি প্ল্যাটফরমগুলোর দিকে। যা হোক, যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি বড় পর্দা নিয়েই থাকতে চাই।

LEAVE A REPLY