আমাদের দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এর অন্যতম কারণ শারীরিক পরিশ্রম না করা, খাদ্যে ভেজাল ও প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার খাওয়া। বংশে না থাকলেও অনেকের ডায়াবেটিস হচ্ছে।
ডায়াবেটিস নিয়ে আমাদের দেশে নানা কুসংস্কার এবং ভুল ধারণা প্রচলিত আছে।
এখন ডায়াবেটিসের ওষুধ নিয়েও দানা বাঁধছে কিছু ভুল ধারণা। যেমন : রোগীরা প্রায়ই জানতে চান, মেটফরমিন ওষুধ খেলে কিডনির সমস্যা হয় কি না অথবা বিদেশে ওষুধটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে কি না।
এগুলো একেবারেই ভুল ধারণা। এমন কোনো কিছু কোথাও ঘটেনি।
২০২৪ সালের আমেরিকান ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের (এডিএ) গাইডলাইন অনুযায়ী, ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মেটফরমিন ওষুধ খুবই প্রয়োজনীয়। ডায়াবেটিস প্রথমে ধরা পড়লে, খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়মের পরেই মেটফরমিন প্রথম ওষুধ হিসেবে প্রেসক্রাইব করার জন্য সব গাইডলাইনে বলা আছে। তবে আগে থেকেই যাদের কিডনি বিকল অথবা ক্রিয়েটিনিন ১.৫ এর বেশি তাদের মেটফরমিন দেওয়া যায় না।
মেটফরমিনের বেশ কিছু সুবিধা বা উপকারী দিক আছে।
* এটি দামে সাশ্রয়ী।
* ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমিয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
* হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
* ওষুধটির কারণে রুচি কমে যায়। যাদের ওজন বেশি, তাদের ওজন কমাতে সহায়তা করতে পারে বা ওজন বাড়ায় না।
* ডায়াবেটিস ছাড়াও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমানোর জন্য পিসিওএস রোগীদেরও প্রেসক্রাইব করা হয়ে থাকে।
তবে অনেক রোগী মেটফরমিন সহ্য করতে পারেন না। মেটফরমিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে পাকস্থলীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন : গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যাওয়া, পাতলা পায়খানা হওয়া এবং ওজন কমে যাওয়া। এসব সমস্যা দেখা দিলে রোগীকে মেটফরমিন খেতে বলা হয় না। তবে কোনো ওষুধই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়। ডায়াবেটিসসহ যেকোনো শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ওষুধ খাওয়া উচিত।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. মাজহারুল হক তামিম
মেডিসিন ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ।
ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মালিবাগ, ঢাকা।