আস্তানায় কাজাখস্তানের পতাকার পাশ দিয়ে কয়েকজন হেঁটে যাচ্ছেন। ফাইল ছবি : রয়টার্স
কাজাখস্তানের সংসদ বুধবার রাশিয়ার অ্যান্টি-এলজিবিটিকিউ আইনের অনুকরণে একটি বিতর্কিত বিল পাস করেছে, যা জনসমক্ষে ও গণমাধ্যমে তথাকথিত ‘অপ্রচলিত যৌন অভিমুখিতা’র প্রচার নিষিদ্ধ করবে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই পদক্ষেপকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি রাশিয়ার মিত্র কাজাখস্তানের মতো মধ্য এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রে এলজিবিটিকিউ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও মর্যাদাকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, ‘জনসমক্ষে ও গণমাধ্যমে পেডোফিলিয়া এবং/অথবা অপ্রচলিত যৌন অভিমুখিতা প্রচারসংবলিত যেকোনো তথ্য নিষিদ্ধ করা হবে।’
যদিও এই বিলটি কার্যকর হওয়ার আগে সংসদের উচ্চকক্ষে অনুমোদন পেতে হবে।
বহু মানবাধিকার সংগঠন সংসদ সদস্যদের কাছে আইনটি প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ ফর হিউম্যান রাইটস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই আইনটি গ্রহণ করা হলে তা কাজাখস্তানের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিশ্রুতিগুলো স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করবে।’
রাশিয়া ও চীনের মাঝখানে অবস্থিত, প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র কাজাখস্তান বর্তমানে তার শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে।
কাজাখ প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ত টোকায়েভ বর্তমানে মস্কো সফরে রয়েছেন, যেখানে তার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে।
এ বছরের শুরুতে টোকায়েভ ‘এলজিবিটিকিউ মূল্যবোধের প্রসার’ নিয়ে কঠোর অবস্থান প্রকাশ করেছিলেন।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘বহু দশক ধরে তথাকথিত গণতান্ত্রিক নৈতিক মূল্যবোধ, যার মধ্যে এলজিবিটিও অন্তর্ভুক্ত, বিভিন্ন দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
মস্কোর ভাষা অনুকরণ করে তিনি আরো দাবি করেন, ‘বিভিন্ন এনজিও ও ফাউন্ডেশন এসব মূল্যবোধকে ছদ্মাবরণ হিসেবে ব্যবহার করে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে।’
২০১৩ সালে রাশিয়া নিজস্ব অ্যান্টি-এলজিবিটিকিউ আইন প্রথম চালু করে, যেখানে শিশুদের মধ্যে তথাকথিত ‘অপ্রচলিত যৌন সম্পর্কের প্রচার’ নিষিদ্ধ করা হয়।
২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণের পর আইনটির পরিধি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত করা হয় এবং এরপর থেকে রুশ কর্তৃপক্ষ এলজিবিটিকিউ সংগঠন ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান তীব্র করেছে।
রাশিয়া ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ অনুরূপ ‘এলজিবিটিকিউ প্রচারবিরোধী’ আইন পাস করেছে, যা সমালোচকদের মতে রাশিয়ার আইন দ্বারা অনুপ্রাণিত।










































