‘মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করা হয়নি’

আফজাল হোসেন

তাকে বলা হয় চিরসবুজ অভিনেতা। তিনি আফজাল হোসেন। তার অভিনয়ের ভক্ত অসংখ্যা। দেশের নানা ইস্যুতে প্রায়ই ফেসবুকে পোস্ট দেন এই অভিনেতা।

যেমন দিলেন গতকাল রাতে।

তিনি ফেসবুকে নিজের একটি পোর্টেট আপলোড করে লেখেন, ‘মানুষকে কি মানুষ বলে গণ্য করা হয়? এই প্রশ্ন নিজেকে নিজে করি। অন্যকে করার সাহস হয় না, কে কী মনে করে! এর সঙ্গে, তার সঙ্গে কথা হয়- সবার মনেই দেখি ‘মনে করার’ ভয়। কোন কথার কে কী মানে করবে, তার ভয়।

অনেককাল ধরে মানুষের মনে ভয় জমতে জমতে এমন ভয়ানক অবস্থা হয়েছে। মানুষ হাসতে চেয়েও হাসে না, খুশি হতে চেয়েও ভাবে, খুশি হওয়া উচিত হবে কি হবে না- আবার মন খারাপ হলে কেন তার মন খারাপ এই গবেষণা শুরু হয়ে যেতে পারে ভেবে দাঁত বের করে অকারণে হেসে থাকতে হয় মানুষকে।’

তিনি আরো লেখেন, ‘ছোটবেলায় ভূতের ভয় ছিল। এবেলায় ভাব চক্কর দেখে মনে হয়- মানুষকেই মানুষের বেশি ভয়।

এখনকার মানুষেরা আপনজনের পাশে বসেও মুখ খোলে সাবধানে। মানুষ কবে থেকে সাবধান? জ্ঞান হওয়ার পর থেকে। কিসের জন্য, কী হইতে সাবধান? মান-সম্মান বজায় রাখতে সাবধান। দেশভাগ চোখে  দেখা হয়নি। বড়দের গল্পে গল্পে জানা হয়- মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করা হয়নি- সে কারণেই ভাগাভাগি।

৫২ তে ভাষার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে মানুষকে- কেন প্রাণ দিতে হয়েছিল? উত্তর একই- মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করা হয়নি।’

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধ না জানা মানুষদের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া, স্বাধীনতার খোয়াব সত্য করে তোলার আকাঙ্ক্ষায় মাটির মানুষদের আগুন হয়ে ওঠা, জীবনের বিনিময়ে হলেও নিজের করে পেতে হবে একটা দেশ, পতাকা- এই চাওয়ার কারণ, মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করা হয়নি।’

২০২৪-এর আন্দোলন নিয়ে লেখেন, ‘সেখান থেকে সোজা এই ২০২৪-এ আসি। শহর, রাজপথ উত্তাল হলো একটা মন্দ সম্বোধনে। বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিল পবিত্র প্রাণ তরুণ, কিশোররা। লাল সবুজ পতাকা আর আমাদের দেশ দেখল, আরো এক দফা বেদনাদায়ক রক্তপাত। নেপথ্যের মূল কারণ- ক্রমাগত অসম্মানিত হয়েছে মানুষ। মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করা হয়নি। ৪৭ হোক বা ২০২৪- সকল কালে মানুষের চাওয়া, আশা একটাই- মানুষ তার প্রাপ্য সম্মান পাবে। মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করা হবে।’

LEAVE A REPLY