নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে ইরাকিরা

ছবিসূত্র : রয়টার্স

নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য মঙ্গলবার ভোট দিচ্ছেন ইরাকিরা। চার বছরের মেয়াদের এই নির্বাচনকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ওয়াশিংটন ও তেহরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, নতুন ৩২৯ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোট দিচ্ছেন দেশটির নাগরিকরা। সারাদেশে ভোটগ্রহণ চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আল-সুদানির নেতৃত্বাধীন জোটের সবচেয়ে বেশি আসন জেতার সম্ভাবনা থাকলেও, তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে শিয়া, সুন্নি এবং কুর্দি দলগুলোর মধ্যে সরকার গঠন ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন হতে পারে।

ইরাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের হার ক্রমেই কমে যাচ্ছে।অনেক ভোটারই এখন এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়েছেন।

সাধারণ ইরাকিরা অভিযোগ করছেন, দেশে ব্যাপক দুর্নীতি, নিন্মমানের জনসেবা ও বেকারত্ব তাদের জীবনে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে।বিশ্লেষক ও জনমত জরিপকারীরা ধারণা করছেন, এ বছর ভোটার উপস্থিতি ২০২১ সালের রেকর্ড সর্বনিম্ন ৪১ শতাংশেরও নিচে নেমে যেতে পারে। এর পেছনে রয়েছে সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক হতাশা এবং জনপ্রিয় শিয়া ধর্মগুরু মোকতাদা আল-সাদরের নির্বাচনী বর্জনের আহ্বান, যার সমর্থকগোষ্ঠীতে রয়েছে কয়েক লাখ নিবেদিত ভোটার।

এ বছরের নির্বাচনে রাজনীতিতে নতুনভাবে প্রবেশের আশায় বহু তরুণ প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। তবে পুরোনো প্রভাবশালী ও পৃষ্ঠপোষকতানির্ভর রাজনৈতিক নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে তাদের সফলতার সম্ভাবনা অনিশ্চিত। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, সাধারণ নাগরিকদের অংশগ্রহণ কমে গেলে, এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা আরো ক্ষয় হতে পারে। 

বাগদাদভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক আহমেদ ইউনুস বলেন, ‘ইরাকের ২ কোটি ১০ লাখ নিবন্ধিত ভোটারের জন্য মঙ্গলবারের ভোট হয়তো কেবল পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থাকেই আরো দৃঢ়ভাবে অনুমোদন দেবে।’

তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের ফলাফল ইরাকের রাজনৈতিক মানচিত্রে কোনো নাটকীয় পরিবর্তন আনবে বলে মনে হচ্ছে না।

’ তবুও, ভোটটি এমন এক সংবেদনশীল সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যার ফলাফল পেতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।

পরবর্তী সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রভাবের মধ্যে সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি এমন ডজনখানেক সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সামলাতে হবে, যারা তেহরানের কাছাকাছি এবং রাষ্ট্রের চেয়ে নিজ নেতাদের কাছে বেশি অনুগত। একই সঙ্গে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে সেই মিলিশিয়াগুলো ভেঙে দেওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান চাপেরও মুখে পড়তে হবে।

সূত্র : আলঅ্যারাবিয়া। 

LEAVE A REPLY